-
ক) সব প্রাণীর ডি. এন. এ একইরকম বেস পেয়ার দিয়ে তৈরি। |
খ) মানুষকে শ্রেষ্ঠ প্রাণীর মর্যাদা দিতে অনিচ্ছুক বলে কিউরেটরদ্বয় নমুনা হিসেবে এ প্রাণীটিকে সঙ্গে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। কিউরেটরদ্বয় মহাজাগতিক কাউন্সিলের জন্য শ্রেষ্ঠ প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করতে পৃথিবীতে আসে। বিভিন্ন প্রাণীর মধ্য থেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে মানুষকে নির্বাচন করতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত তারা পিছিয়ে যায় মানুষের স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী কার্যকলাপ দেখে। মানুষের নানারকম ধ্বংসাত্মক কাজকর্ম দেখে শ্রেষ্ঠ প্রাণীর নমুনা হিসেবে মানুষকে নিয়ে যেতে কিউরেটরদ্বয়ের অনিচ্ছায় উক্তিটিতে প্রকাশ পেয়েছে। |
গ) ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পে উদ্দীপকে বর্ণিত মানুষের আত্মবিনাশী কর্মকাণ্ডের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। ‘আত্মবিনাশী’ শব্দটির অর্থ হলো নিজের কোনো সৃষ্টিকে বিচার বিবেচনার উর্দ্ধে গিয়ে নিজেই ধ্বংস করে ফেলা। আর প্রতিনিয়ত এ আত্মবিনাশী কর্মকাণ্ডের সাথে সাথে যুক্ত হচ্ছে পৃথিবীর মানুষ। বিবেকবোধ, মানবতার উর্ধ্বে গিয়ে মানুষ ধ্বংস করছে সভ্যতা। উদ্দীপকে মেধা, মনন, শ্রম, ভালোবাসা দিয়ে সভ্যতা, বংশধারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আবার এ মানুষের ঘৃণায়, ক্রোধে, প্রতিশোধে, লোকালয়, সভ্যতা ধ্বংস হচ্ছে। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (১৯৫২) রচিত ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পে লেখক শ্লেষ ও পরিহাসের মিশ্যণ দিয়ে মানুষের আত্মধ্বংসী কার্যকলাপ এর কথা তুলে ধরে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। লেখক দেখিয়েছেন এখানে যে মাত্র ২মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে এসে কীভাবে মানুষ পৃথিবীতে বাসের অযোগ্য করে তুলেছে এবং তুলছে।
|
ঘ) ‘এই সুন্দর গ্রহের স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী প্রাণী একমাত্র মানুষই’- উক্তিটি একেবারে যথার্থ। ‘স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী’ অর্থ হলো বিচার বিবেচনার উর্ধ্বে গিয়ে নিজ খেয়াল খুশিমত ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়া। ‘স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী’ কথাটির সাথেই উঠে আসে মানুষ নামের প্রাণীটির নাম। মানুষের ‘স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী’ কর্মকাণ্ডই তাকে ‘স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী’ প্রাণীতে পরিণত করেছে। উদ্দীপকে মানুষ তার শ্রম, মেধা, ভালোবাসা, প্রেম সবকিছু দিয়ে অরণ্যভেদ করে লোকালয় গড়ে তোলে। আবার সেই মানুষের ক্রোধ, হিংসা, ঘৃণা আর প্রতিশোধের অনলে মানুষের গড়ে তোলা লোকালয় অরণ্যে পরিণত হয়। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (১৯৫২) রচিত ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পে লেখক নানা প্রাণীর বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। কিন্তু শুধু ‘মানুষ’ নামের প্রাণীটির সন্ধান পাওয়া গেছে যারা একসাথে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সভ্যতার আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সভ্যতাকে ধ্বংস করে চলেছে। মানুষের এ স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী কার্যক্রমের জন্য মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মানুষই একমাত্র প্রাণী যে পৃথিবীকে বাসের অনুপযোগী করে তুলেছে এবং তুলছে। উদ্দীপকে ও গল্পে উভয় স্থানেই মানুষ একসাথে সৃষ্টিশীল ও ধ্বংসকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। সুতরাং আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপক ও পটিত গল্পের আলোকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি একেবারে যথার্থ। |
ক) বিজ্ঞানকে উপলক্ষ্য করে কল্পনার বিস্তারে অসামান্যতা মুহম্মদ জাফর ইকবালের রচনার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। |
খ) পিঁপড়ার পরাপকারী, সুবিবেচক ও সুশৃঙ্খল মনোভাবের কারণে মহাজাগতিক কিউরেটররা পিঁপড়াকে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে গ্রহণ করল। কিউরেটরদের মতে, পিঁপড়ারা সুশৃঙ্খল, পরিশ্রমী, সুবিবেচক ও পরেণামদর্শী। এরা বিপদে দিশেহারা হয় না। পরস্পর বিবাদেও লিপ্ত হয় না। এরা সামাজিক এবং সর্বোপরি, আত্মবিধ্বংসী নয়। এসকল বৈশিষ্ট্যের কারণে মহাজাগতিক কিউরেটররা পিঁপড়াকে গ্রহণ করল। |
গ) হ্যাঁ, ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পের কিউরেটরদের বিচারের আলোকে উদ্দীপকের কাক প্রাণীটিকে শ্রেষ্ঠ প্রাণী বলা যায়। শ্রেষ্ঠ প্রাণী হলো সেই প্রাণী যার মধ্যে সহমর্মিতা, বিবেচনাবোধ রয়েছে। যে প্রাণী সামাজিক, সুশৃঙ্খল। সভ্যতা পরিবেশ রক্ষায় যার অবদান রয়েছে। সর্বোপরি, যে প্রাণী স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী নয়। উদ্দীপকে কাক পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে। কাক সামাজিক হওয়ায় উদ্দীপকে একটি কাককে আক্রশণ করায় বাকি ঝাক ছুটে আসে। তাদের মধ্যে সহমর্মিতা বিদ্যমান। তারা আত্মবিধ্বংসী নয়। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (১৯৫২) রচিত ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পে কিউরেটরদ্বয় শ্রেষ্ঠ প্রাণীর গুণাবলি হিসেবে সুশৃঙ্খলতা, বিবেচনাবোধ, সামাজিকতা, সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে অবদানকে আদর্শ হিসাবে নিয়েছে। মানুষের মধ্যে এসব গুণাবলি থাকলেও শুধু স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারিতা থাকার জন্য তারা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেনি। অন্যদিকে পিঁপড়া পরিণামদর্শী হওয়ায় ও তার মধ্যে এসব গুণাবলি থাকায় পিঁপড়া শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে। রচনার কিউরেটরদের শ্রেষ্ঠ প্রাণী নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষণকৃত বৈশিষ্ট্যগুলো উদ্দীপকে কাক প্রাণীটির মধ্যে বিদ্যমান। সুতরাং আলোচনার প্রেক্ষিতে উদ্দীপকের কাক প্রাণীটিকে শ্যেষ্ঠ প্রাণী বলা যায়। |
ঘ) ‘কর্মই শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক’ উদ্দীপক ও ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ কল্পকাহিনির আলোকে উক্তিটি যথার্থ ও তাৎপর্যপূর্ণ। শ্রেষ্ঠত্ব সর্বদাই নির্ধারিত হয় কর্মের মাধ্যমে। মানুষ কর্ম বা কাজই তার যোগ্যতার পরিচায়ক। ভালো কাজ যেমন মানুষকে মহান করে, তেমনই মন্দ কাজ মানুষকে ধ্বংসকারী হিসাবে পরিচিতি দেয়। কর্মের মাধ্যমে সমাজ, দেশ ও পৃথিবীতে মানুষের মর্যাদা নির্ধারিত হয়। উদ্দীপকে কাক পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে। তার এ কাজের জন্য বাসযোগ্য হয়ে আছে আমাদের এ পৃথিবী। মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (১৯৫২) রচিত ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ গল্পে লেখক কাজ এর ওপর অধিক প্রাধান্য দিয়েছেন মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়ে। মানুষের স্বেচ্ছা-ধ্বংসকারী কাজের জন্যই মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করা হয়নি। অন্যদিকে পিঁপড়ার সুবিবেচনার সাথে, শৃঙ্খলতার সাথে একতাবদ্ধ হয়ে পরিবেশের ক্ষতি না করে কাজ করে যাওয়ার জন্য পিঁপড়াকে দেয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠত্ব। উদ্দীপক ও পঠিত কল্পকাহিনি বিচার করলে দেখা যায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে উভয় ক্ষেত্রে কাজের ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সুুতরাং আলোচনার প্রেক্ষিতে বরা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি একেবারে যথার্থ। |
ক) ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা জাতীয় রচনা। |
খ) মহাজাগতিক কিউরটেদ্বয়ের মানুষ বাদ দিয়ে নমুনা হিসেবে পিঁপড়া সংগ্রহ করার কারণ নিজেরা নিজেদের কিংবা অন্যদের কোনো ক্ষতি করে না। মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী হওয়া সত্তে¡ও সৃষ্টির পাশাপাশি ধ্বংসলীলা চালায়। পৃথিবীকে হুমকির মধ্যে ফেলে পরিবেশ ও অনাবিল শান্তি ধ্বংস করে। কিন্তু পিঁপড়া কখনও দলছাড়া হয় না, ধ্বংস করে না। এমনকি পরিবেশ নষ্ট করে না। তাদের একাগ্রত ও দলীয় সমন্ধয়ের জন্য মহাজাগতিক কিউরেটরদ্বয় মানুষকে বাদ দিয়ে নমুনা হিসেবে পিঁপড়াকে সংগ্রহ করে। |
গ) কিউরেটরদের বিচারের আলোকে উদ্দীপকের বারন প্রাণীটি শ্রেষ্ঠ। মুহম্মদ জাফর ইকবালের বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ এ সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ পৃথিবীতে পিঁপড়াকে শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কেননা তারা ডাইনোসরের যুগ থেকেই পৃথিবীতে সুবিবেচকের সাথে অত্যন্ত পরিশ্রম করছে এবং পরোপকারী ভূমিকা রাখছে। মানুষের বিবেকীশক্তি থাকলেও তারা পৃথিবীর ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু পিঁপড়ার প্রতিটি কাজ কল্যাণকামী ও উপকারী। উদ্দীপক থেকে জানা যায় বাননের সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা এবং মানুষের দায়িত্বহীনতার কথা। একদিন একটি বানর বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলে সকল বানর এক হয়ে শোক প্রকাশ করে এবং প্রতিশোধ নেয়ার আকাক্সক্ষায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝাঁকুনি দিতে থাকে। কিন্তু যখন একটি মেয়ে দিবালোকে কলেজের যাওয়ার পথে দুষ্টু ছেলেদের কর্তৃক্ত উত্যক্ত হয় তখন মানুষ শুধু দাঁড়িয়ে তামাশা দেখতে থাকে এবং সামাজিক দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচেয় দেয়। সুতরাং কিউরেটরদের বিচারের আলোকে পিঁপড়ার মতোই উদ্দীপকে বর্ণিত বানররা শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছে। |
ঘ) “উদ্দীপক ও ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ রচনার আলোকে বলা যায় ইতিবাচক কর্মই শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক” মন্তব্যটি যথাযর্থ। সৌরজগতের তৃতীয় গ্রন্থে পিঁপড়াকে কিউরেটরদ্বয় নানাদিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ প্রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সাময়িকভাবে বিবেকীশক্তির জন্য মানুষকে শ্রেষ্ঠ প্রাণী বলে মনে হলেও নিজেদের কর্তব্যহীনতা ও ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য নিকৃষ্ট প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু পরিশ্রমী, উপকারী প্রাণী পিঁপড়ার প্রতিটি পদক্ষেপ বা কর্মকাণ্ড অন্য প্রাণীদের কল্যাণে হয়ে থাক। অত্যন্ত সুসংহত ও সামজবদ্ধভাবে বাস করছে তারা। উদ্দীপকের বিদুৎস্পষ্ট হয়ে মারা যেতে দেখা যায় একটি বানরকে। এতে সকল বানর এক হয়ে শোকানুভূতি জ্ঞাপন করে এবং প্রতিশোধের আগুনে দাউ দাউ করে জ¦লতে থাকে। এখানে বানরদের ইতিবাচক ভূমিকা পরিদৃষ্ট হয়। কলেজে যাওয়ার পথে একটি মেয়ে উত্যক্ত হলে মানুষের নেতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়। এতে মানুষ চরম সামাজিক মায়াহীনতা ও নিকৃষ্ট মনের পরিচয় দিয়েছে। সুতরাং ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ রচনায় পিঁপড়াকে অধ্যবসায়, পরিশ্রম ও পরোপকারের বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানা যায়। তারা সংঘবদ্ধ সচেতন একে অপরের বিপদে আপদের সঙ্গী। এসব কারণেই কিউরেটদ্বয় পিঁপড়াকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রাণীতে ভূষিত করেছেন। অনুরূপভাবে উদ্দীপকে বর্ণিত একদিন একটি বানর বিদুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলে সব বানর এক হয়ে শোক প্রকাশ করে এবং প্রতিবাদের নেশায় অগ্নিমূর্তি হয়ে উঠে। এদিকে কলেজে যাওয়ার পথে বদমাইশ ছেলেদের কর্তৃক একটি মেয়ে উত্যক্ত হলে কাজল তার বন্ধুদের নিয়ে প্রতিবাদ করে ভূমিকা রাখে ইতিবাচক। অতএব প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথাযথ। |