সুচেতনা

সুচেতনা

জীবনান্দন দাশ


সুচেতনা, তুমি এক দূরতর দ্বীপ
বিকেলের নক্ষত্রের কাছে; 🔒ব্যাখ্যা
সেইখানে দারুচিনি-বনানীর ফাঁকে
নির্জনতা আছে। 🔒ব্যাখ্যা
এই পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতা
সত্য; তবু শেষ সত্য নয়। 🔒ব্যাখ্যা


আজকে অনেক রূঢ় রৌদ্রে ঘুরে প্রাণ 🔒ব্যাখ্যা 

পৃথিবীর মানুষকে মানুষের মতো

ভালোবাসা দিতে গিয়ে তবু,  🔒ব্যাখ্যা

দেখেছি আমারি হাতে হয়তো নিহত

ভাই বোন বন্ধু পরিজন প’ড়ে আছে;

পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন; 🔒ব্যাখ্যা

মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে। 🔒ব্যাখ্যা


সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে— এ-পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে🔒ব্যাখ্যা

সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ; 🔒ব্যাখ্যা

এ-বাতাস কী পরম সূর্যকরোজ্জ্বল; 🔒ব্যাখ্যা

প্রায় তত দূর ভালো মানব-সমাজ 🔒ব্যাখ্যা

আমাদের মতো ক্লান্ত ক্লান্তিহীন নাবিকের হাতে 🔒ব্যাখ্যা

গ’ড়ে দেবো, আজ নয়, ঢের দূর অন্তিম প্রভাতে। 🔒ব্যাখ্যা

মাটি-পৃথিবীর টানে মানবজন্মের ঘরে কখন এসেছি, 🔒ব্যাখ্যা

না এলেই ভালো হ’তো অনুভব ক’রে; 🔒ব্যাখ্যা

এসে যে গভীরতর লাভ হ’লো সে-সব বুঝেছি 🔒ব্যাখ্যা

শিশির শরীর ছুঁয়ে সমুজ্জ্বল ভোরে;

দেখেছি যা হ’লো হবে মানুষের যা হবার নয়—

শাশ্বত রাত্রির বুকে সকলি অনন্ত সূর্যোদয়। 🔒ব্যাখ্যা


কবি-পরিচিতি

bvg

Rxebvb›` `vk |

wcZv

mZ¨vb›` `vk| wZwb wQ‡jb ewikvj †Rjvi eªR‡gvnb ¯‹z‡ji cÖavb wkÿK|

gvZv

Kzmyg-Kzgvix `vk| Bwb GKRb ¯^fveKwe wQ‡jb| Zuvi weL¨vZ KweZv: ÒAvgv‡`i †`‡k n‡e †mB †Q‡j K‡e/K_vq bv eo n‡q Kv‡R eo n‡e|Ó Òbvix‡Z¡i Av`k©Ó bv‡g cÖeÜ wj‡L ¯^Y©c`K jvf K‡ib|

Rb¥

1899 mv‡ji 17B †deªæqvwi|

Rb¥¯’vb

ewikvj ‡Rjvi avbwmuwo b`xi ZxieZ©x MÖvg|

wkÿv

gva¨wgK       : g¨vwUªK (1915) eªR‡gvnb ¯‹zj, ewikvj|

D”P gva¨wgK : AvB, G (1917) eªR‡gvnb K‡jR|

D”PZi wkÿv : 1919 wLªóv‡ã KjKvZv †cÖwm‡WwÝ K‡jR †_‡K we.G Abvm© (m¤§vb) wWwMÖ Ges 1921 wLóv‡ã KjKvZv

                 wek¦we`¨vjq †_‡K Bs‡iwR mvwn‡Z¨ Gg.G wWwMÖ jvf K‡ib|   

‡ckvMZ Rxeb

¯^í mg‡qi Rb¨ wewfbœ †ckv Aej¤^b Ki‡jI g~jZ Bs‡iwR mvwn‡Z¨i Aa¨vcK wn‡m‡eB wZwb Rxeb AwZevwnZ K‡ib| †hgb: Aa¨vcbv : KjKvZv wmwU K‡jR (1922-1928); ev‡MinvU K‡jR (1929); w`jøx­i ivghk K‡jR (1929-1930); eªR‡gvnb K‡jR (1935-1946); LoMcyi K‡jR (1951-1952); ewolv K‡jR (1952); nvIov Mvj©m K‡jR (1953-1954)|

mvwnZ¨Kg©

Kwei gv KzmygKzgvix `vk wQ‡jb †mKv‡ji weL¨vZ Kwe| gv‡qi KvQ †_‡K wZwb KweZv †jLvi †cÖiYv jvf K‡iwQ‡jb| wZwb g~jZ Kwe wn‡m‡eB AwaK cwiwPZ| Z‡e wZwb cÖeÜ, Dcb¨vmI iPbv K‡i‡Qb|

g„Zz¨

KjKvZvq GK Uªvg-`yN©Ubvq AvnZ n‡q 1954 wLªóv‡ãi 22 A‡±vei Rxebvb›` `vk g„Zz¨eiY K‡ib|


পাঠ-পরিচিতি

"সুচেতনা" কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন (১৯৪২) কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। “সুচেতনা" জীবনানন্দ দাশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। এ কবিতায় সুচেতনা সম্বোধনে কবি তাঁর প্রার্থিত, আরাধ্য এক চেতনানিহিত বিশ্বাসকে শিল্পিত করেছেন। কবির বিশ্বাসমতে, সুচেতনা দূরতম দ্বীপসদৃশ একটি ধারণা, যা পৃথিবীর নির্জনতায়, যুদ্ধে, রক্তে নিঃশেষিত নয়। চেতনাগত এই সত্তা বর্তমান পৃথিবীর গভীরতর ব্যাধিকে অতিক্রম করে সুস্থ ইহলৌকিক পৃথিবীর মানুষকে জীবন্ময় করে রাখে। জীবমুক্তির এই চেতনাগত সত্যই পৃথিবীর ক্রমমুক্তির আলোকে প্রজ্বলিত রাখবে, মানবসমাজের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করবে। শাশ্বত রাত্রির বুকে অনন্ত সূর্যোদয়কে প্রকাশ করবে। 

             

উত্তর : আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জীবনানন্দ দাশ।

উত্তর : জীবনানন্দ দাশ বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

উত্তর : জীবনানন্দ দাশের মায়ের নাম কুসুমকুমারী দাশ

উত্তর : জীবনানন্দ দাশ ইংরেজি বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন 

উত্তর : জীবনানন্দ দাশের পিতার নাম সত্যানন্দ দাশ। 

উত্তর : সুচেতনা বলতে কবি এক শুভ চেতনাকে বুঝিয়েছেন। 
কবির কল্পনায় সুচেতনা দূরতম দ্বীপের মতো একটি ধারণা। এই চেতনা পৃথিবীর নির্জনতায়, যুদ্ধে, রক্তে নিঃশেষিত নয়। কবি সুচেতনা সম্বোধনে তাঁর প্রার্থিত, আরাধ্য, প্রত্যাশিত এক চেতনানিহিত বিশ্বাসকে শিল্পরূপ দান করছেন। কবির কল্পনায় এই চেতনাই পৃথিবীর বিপর্যস্ত অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে মানুষকে জীবন্ময় করবে। পৃথিবী ও মানুষের ক্রমমুক্তির মাধ্যমে মানব সমাজের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করবে। 

উত্তর : আলোচ্য পঙ্ক্তিতে কবি মানুষের কাছে থেকে সুচেতনার বহুদূর অবস্থানের বিষয়টি বুঝিয়েছেন।  
কবি সুচেতনাকে বলেছেন দূরতর দ্বীপ। বিকেলের নক্ষত্রমÐলী যেমন আলোকবর্ষব্যাপী দূরে অবস্থিত তেমনই সুচেতনাও মানুষের কাছে থেকে বহু দূরে অবস্থান করা যায় একটা অনধিগম্য দূরত্ব তৈরি হয় সেই দূরত্বের কথা বলেছেন কবি সুচেতনার সম্পর্কে। 

উত্তর : ‘সেই খানে দারুচিনি-বনানীর ফাঁকে নির্জনতা আছে’ কথাটির মাধ্যমে কবি তাঁর নির্জনতাপ্রিয় মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
কবি জীবনানন্দ দাশ আধুনিক সভ্যতার নানাবিধ সংকট থেকে মুক্তির প্রত্যাশী। কবি জানেন, তার জন্য প্রয়োজন মানুষের সুচেতনার উদ্বোধন। কিন্তু নাগরিক জীবনের কোলাহলে সুচেতনার উপস্থিতি দুর্লভ। এগুলো থেকে দূরে দারুচিনি-বনানীর ফাঁকে অর্থাৎ প্রকৃতির নিবিড় আশ্রয়ে যে নির্জনতা তা কবির কাক্সিক্ষত। কারণ এমন পরিবেশে বিরাজমান নির্জনতা মানুষকে দিতে পারে সুচেতনার সন্ধান। 

উত্তর : প্রাকৃতিক শান্তি ও নির্জনতায় শুভচেতনা বিরাজিত বলে কবি ‘সুচেতনা’ কবিতায় নির্জনতা প্রত্যাশা করেছেন। 
সভ্যতার রক্তক্ষয়ী হানাহানি, মরণপ্রবণতা, সফলতা-বিফলতার দ্ব›দ্ব কবিকে বিমূঢ় করে দিয়েছে। তিনি অনুভব করেছেন পৃথিবীর গভীরতর অসুস্থতা। পৃথিবীকে অসুস্থতা থেকে মুক্ত করতে প্রয়োজন শুভচেতনার আলোকিত পথ। কবির বিশ্বাসকে নগরের যন্ত্রণাক্লিষ্ট জীবনে সুচেতনার অস্তিত্ব নেই। সুচেতনা বিরাজিত প্রাকৃতিক শান্তি ও নির্জনতায়। তাই ‘সুচেতনা’ কবিতায় কবি নির্জনতা প্রত্যাশা করেছেন। 

উত্তর : পৃথিবীতে মানুষের আলোকিত ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পরম আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতাকে কবি শেষ সত্য বলে মনে করেন না ।
পৃথিবীতে সভ্যতার বিকাশের পাশাপাশি বহু যুদ্ধ রক্তপাত প্রাণহানি সংঘটিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। অর্থাৎ মানুষের জীবনের বিফলতা ও সফলতা অতীতেও ছিল, এখনো আছে। কিন্তু কবির স্থির বিশ্বাস রণ রক্তের বীভৎসতা থেকে ভবিষ্যতে পৃথিবীর মানুষের মুক্তি মিলবে। আর এই আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে রণ রক্ত সফলতাকে কবি শেষ সত্য বলে মনে করেন না।

Score Board

_









_

_









_

_









_

_









_

_









_
Score Board