সুচেতনা
জীবনান্দন দাশ
আজকে অনেক রূঢ় রৌদ্রে ঘুরে প্রাণ 🔒ব্যাখ্যা
পৃথিবীর মানুষকে মানুষের মতো
ভালোবাসা দিতে গিয়ে তবু, 🔒ব্যাখ্যা
দেখেছি আমারি হাতে হয়তো নিহত
ভাই বোন বন্ধু পরিজন প’ড়ে আছে;
পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন; 🔒ব্যাখ্যা
মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে। 🔒ব্যাখ্যা
সুচেতনা, এই পথে আলো জ্বেলে— এ-পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে; 🔒ব্যাখ্যা
সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ; 🔒ব্যাখ্যা
এ-বাতাস কী পরম সূর্যকরোজ্জ্বল; 🔒ব্যাখ্যা
প্রায় তত দূর ভালো মানব-সমাজ 🔒ব্যাখ্যা
আমাদের মতো ক্লান্ত ক্লান্তিহীন নাবিকের হাতে 🔒ব্যাখ্যা
গ’ড়ে দেবো, আজ নয়, ঢের দূর অন্তিম প্রভাতে। 🔒ব্যাখ্যা
মাটি-পৃথিবীর টানে মানবজন্মের ঘরে কখন এসেছি, 🔒ব্যাখ্যা
না এলেই ভালো হ’তো অনুভব ক’রে; 🔒ব্যাখ্যা
এসে যে গভীরতর লাভ হ’লো সে-সব বুঝেছি 🔒ব্যাখ্যা
শিশির শরীর ছুঁয়ে সমুজ্জ্বল ভোরে;
দেখেছি যা হ’লো হবে মানুষের যা হবার নয়—
শাশ্বত রাত্রির বুকে সকলি অনন্ত সূর্যোদয়। 🔒ব্যাখ্যা
পাঠ-পরিচিতি
"সুচেতনা" কবিতাটি জীবনানন্দ দাশের 'বনলতা সেন (১৯৪২) কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে। “সুচেতনা" জীবনানন্দ দাশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা। এ কবিতায় সুচেতনা সম্বোধনে কবি তাঁর প্রার্থিত, আরাধ্য এক চেতনানিহিত বিশ্বাসকে শিল্পিত করেছেন। কবির বিশ্বাসমতে, সুচেতনা দূরতম দ্বীপসদৃশ একটি ধারণা, যা পৃথিবীর নির্জনতায়, যুদ্ধে, রক্তে নিঃশেষিত নয়। চেতনাগত এই সত্তা বর্তমান পৃথিবীর গভীরতর ব্যাধিকে অতিক্রম করে সুস্থ ইহলৌকিক পৃথিবীর মানুষকে জীবন্ময় করে রাখে। জীবমুক্তির এই চেতনাগত সত্যই পৃথিবীর ক্রমমুক্তির আলোকে প্রজ্বলিত রাখবে, মানবসমাজের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চিত করবে। শাশ্বত রাত্রির বুকে অনন্ত সূর্যোদয়কে প্রকাশ করবে।
১) কোন দিক দিয়ে জীবনানন্দ দাশের কবিতা তুলনারহিত?
২) কবি ছাড়াও জীবনানন্দ দাশের পরিচয় রয়েছে কী হিসেবে?
৩) 'সুতীর্থ' জীবনানন্দ দাশের কী ধরনের গ্রন্থ?
৪) জীবনানন্দ দাশের লেখা উপন্যাসের সংখ্যা কতটি?
৫) জীবনানন্দ দাশ সুচেতনাকে দূরতর দ্বীপ রূপে কল্পনা করেছেন কেন?