বন্দনা

বন্দনা

শাহ মুহম্মদ সগীর


লেখক পরিচিতি:

নাম : শাহ মুহম্মদ সগীর

জন্ম তারিখ: আনুমানিক ১৪-১৫ শতকের কবি।

বংশ পরিচয়

জন্মস্থান: তৎকালীন আরাকানের সাংস্কৃতিক রাজধানী চট্টগ্রাম।

তাঁর পিতা-মাতার পরিচয় সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। তিনি চট্টগ্রাম এক ফকির বংশে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবন : তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যায় না। তবে অনুমান করা যায় যে, তিনি স্বশিক্ষিত ও সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের সভাকবি ছিলেন।

সাহিত্যকর্ম 

কাব্যগ্রন্থ: 'ইউসুফ জোলেখা'। তিনি এদেশের মুসলমানদের ধর্মকথা শোনানোর উদ্দেশ্যে মূলত কাব্য রচনা করেছিলেন।

সম্মাননা : তিনি সভাকবি হিসেবে গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের রাজদরবারে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান লাভ করেন।

জীবনাবসান :আনুমানিক পনেরো শতক।



দ্বিতীয়ে প্রণাম করোঁ মাও বাপ পাত্র ।🔒ব্যাখ্যা

যান দয়া হন্তে জন্ম হৈল বসুধায় 🔒ব্যাখ্যা

পিঁপিড়ার ভয়ে মাও না থুইলা মাটিত ।🔒ব্যাখ্যা

কোল দিআ বুক দিআ জগতে বিদিত 🔒ব্যাখ্যা

অশক্য আছিলঁ মুই দুর্বল ছাবাল 🔒ব্যাখ্যা

তান দয়া হন্তে হৈল এ ধড় বিশাল ॥🔒ব্যাখ্যা

না খাই খাওয়াএ পিতা না পরি পরাএ ।🔒ব্যাখ্যা

কত দুক্ষে একে একে বছর গোঞাএ ॥🔒ব্যাখ্যা

পিতাক নেহায় জিউ জীবন যৌবন।🔒ব্যাখ্যা

কনে বা সুধিব তান ধারক কাহন 🔒ব্যাখ্যা

ওস্তাদে প্রণাম করোঁ পিতা হন্তে বাড় 🔒ব্যাখ্যা

দোসর-জনম দিলা তিঁহ সে আহ্মার 🔒ব্যাখ্যা

আহ্মা পুরবাসী আছ জথ পৌরজন ।

ইষ্ট মিত্ৰ আদি জথ সভাসদগণ ।

তান সভান পদে মোহার বহুল ভকতি ।

সপুটে প্রণাম মোহার মনোরথ গতি ॥🔒ব্যাখ্যা

মুহম্মদ সগীর হীন বহোঁ পাপ ভার ৷

সভানক পদে দোয়া মাগোঁ বার বার ।🔒ব্যাখ্যা


উত্তর : _

উত্তর :  শাহ মুহম্মদ সগীর।

উত্তর : গিয়াসউদ্দীন আজম শাহ।

উত্তর :  পনেরো শতকের প্রথম দিকে রচিত হয়েছিল।

উত্তর : চট্টগ্রাম অঞ্চলের শব্দের ব্যবহার।

উত্তর : দেশি ভাষায়।

উত্তর : কবি তার কাব্য রচনায় সাফল্য লাভের জন্য বাবা-মায়ের পায়ে প্রণাম করেছেন।
`বন্দনা' কবিতায় কবি কাব্য রচনার সাফল্য লাভের জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। মধ্যযুগীয় সকল কাব্যের সূচনায় বন্দনা অংশের প্রচলন ছিল। কেননা এসব কাব্য সুর করে গাওয়া হতো। `বন্দনা' কবিতার অংশে কবি প্রথমেই বাবা-মায়ের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন। কাব্য রচনায় সাফল্য লাভের জন্য প্রথমেই কবি জন্মদাতা পিতামাতার পায়ে প্রণাম করেছেন।

উত্তর : `যান দয়া হন্তে জন্ম হৈল বসুধায়’ বলতে বাবা-মায়ের দয়া ও ইচ্ছায় সন্তানের জন্মলাভের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।
পিতা-মাতা পরম আপনজন। পৃথিবীতে বাবা-মায়ের মতো আপন কেউ নেই। বাবা-মায়ের ইচ্ছাতেই পৃথিবীতে সন্তানের জন্ম হয়। তাদের দয়া-করুণা, স্নেহ-মমতায়ই জীবন পূর্ণতা পায়। মা যেমন সন্তানকে আদর-যত্নে লালন-পালন করেন, বাবা তেমনই অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অন্ন-বস্ত্রসহ যাবতীয় মৌলিক চাহিদার বন্দোবস্ত করে থাকেন। পিতা-মাতার এমন অকৃপণ ত্যাগের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে শিশু পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। সন্তানের জন্ম ও পরিপূর্ণতায় বাবা-মায়ের এমন অবদানকে কবি আলোচ্য চরণটির মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাভরে স্বীকার করেছেন।

উত্তর : ‘পিঁপড়ার ভয়ে মাও না থুইলা মাটিত’ বলতে কবি মায়ের স্নেহ-মমতা ও কল্যাণদৃষ্টিকেই বড় করে তুলেছেন।
মাতৃস্নেহের তুলনা নেই। প্রতিটি শিশুর পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় ভ‚মিকাটি মা পালন করে থাকেন। মায়ের সদাজাগ্রত কল্যাণদৃষ্টি সন্তানের জীবনপথের পাথেয়স্বরূপ। শিশুকে মা বহু যত্নে লালন-পালন করেন। মায়ের আদর-যত্ন ও পরিচর্যা লাভ করে শিশু ধীরে ধীরে পরিণত মানুষ হয়ে ওঠে। পিঁপড়ার ভয়ে মা সন্তানকে মাটিতে রাখেননি- এই কথা উল্লেখ করে কবি মায়ের সেই স্নেহ-মমতা ও কল্যাণদৃষ্টিকেই বড় করে তুলেছেন।

উত্তর : “কোল দিআ বুক দিআ জগতে বিদিত” বলতে মায়ের কোলে- পিঠে করে সন্তানকে মানুষ করার কথা পৃথিবীর সকলের জানার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
মায়ের স্নেহ-মমতার তুলনা নেই। আর এই চিরন্তন সত্যের আলোকে ‘বন্দনা' কবিতার শুরুতে কবি তার মায়ের ত্যাগের কথা স্বীকার করেছেন। শৈশবকালীন অসহায় অবস্থার কথা উল্লেখ করে মায়ের অকৃত্রিম আদর-যত্ন ও পরিচর্যার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। মা সন্তানকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করেছেন; যা পৃথিবীর সবার জানা। তাই কবি শ্রদ্ধাভরে সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগের বিষয়টি স্মরণ করেছেন।

উত্তর : ‘অশক্য আছিলুঁ মুই দুর্বল ছাবাল’ এখানে কবি মানবশিশুর শৈশবকালীন অসহায় অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
‘বন্দনা’ কবিতায় কবি মায়ের স্নেহ-মমতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। শিশুর শৈশব কাটে অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে। এ সময় মায়ের আদর-যত্ন না পেলে শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ ব্যাহত হয়। মায়ের আদর-যত্ন ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে শিশু ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে ওঠে। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে মায়ের এমন ত্যাগকে কবি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন। মানবশিশুর অসহায় অবস্থার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক মায়ের অকৃত্রিম অবদানকে স্বীকার করার জন্য কবি আলোচ্য চরণটির যোজনা করেছেন।

Score Board

_









_

i. অপত্যস্নেহ

ii. সন্তান বাৎসল্য

iii. উদারতা

নিচের কোনটি সঠিক?











_

_









_

_









_

_









_
Score Board