১) ‘রংপুরে নূরলদীন একদিন ডাক দিয়েছিল
২) নূরলদীনের বাড়ি কোথায়?
৩) ‘তার দীর্ঘ দেহ নিয়ে আবার নূরলদীন দেখা দেয় মরা আঙিনায়’। নূরলদীন দেখা দেয়
৪) ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতায় কাব্য নাট্যাংশে ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ চরণটি ব্যবহৃত হয়েছে
৫) ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কাব্যনাট্যাংশে জ্যোৎস্নার সাথে কী ঝরে পড়ে?
ক) অতীত হঠাৎ হাতে হানা দেয় মানুষের বন্ধ দরজায়। |
খ) উল্লিখিত পঙক্তির মাধ্যমে কবি পাকিস্তানি শাসক কর্তৃক বাঙালির বাক স্বাধীনতা হরণকে ইঙ্গিত করেছেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলার মানুষের ওপর নানারকম জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল দীর্ঘদিন। এদেশের সাধারণ মানুষ নিরুপায় হয়ে সেসব সহ্য করেছে। তারা প্রতিবাদ করতে পারত না তাদের মত প্রকাশের অধিকারকে কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। প্রতিবাদকারীকে তারা কঠোরভাবে দমন করত। এভাবে বাকস্বাধীনতাকে হরণকারীদের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে কবি আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। |
গ) স্বৈরাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার চেতনায় উদ্দীপকের কবিতাংশ ও ‘নূরলদিনের কথা মনে পরে যায়’ কবিতা সাদৃশ্যপূর্ণ। শাসকরা যখন জনগণের ন্যায্য অধিকার হরণ করে অন্যায়ভাবে তাদের ওপর শোষণ ও নির্যাতন চালায়, তখন তারা স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে আখ্যায়িত হয়। মুক্তিকামী জনতা সেই স্বৈরাচারী শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে পারলেই জনগণের বিজয় সূচিত হয়। উদ্দীপকে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী সত্তার আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে। যে বিদ্রোহী নিরবধি যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কোনো ক্লান্তি শ্রান্তি তাকে স্পর্শ করে না। যতদিন আকাশে-বাতাসে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল বন্ধ হবে না ততদিন তার সংগ্রাম চলবে। অত্যাচারীর খড়গহস্ত ধুলিস্যাৎ না করা পর্যন্ত সেই বিদ্রোহী শান্ত হবে না।সৈয়দ শামসুল হক (১৯৩৫) রচিত ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতাটিতে শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠার কথা উচ্চকিত হয়েছে। কবি নূরলদীনকে বিদ্রোহী সত্তার আদর্শ হিসাবে উপস্থাপন করে আমাদের মধ্যে বিদ্রোহের প্রেরণা জাগিয়েছেন। বাংলার দুর্দিনে কবি সকলকে নূরলদীনের মত জেগে ওঠার আহ্বান জাগিয়েছেন। সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দীপকটি কবির এ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে চেতনাগত সাদৃশ্য স্থাপন করেছে। |
ঘ) “উদ্দঈপকটি ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতার সমগ্র চেতনাকে ধারণ করতে পারেনি”মন্তব্যটি একেবারে যথার্থ। ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির সকল মুক্তিসংগ্রামে নূরলদীনের মতো বিদ্রোহীসত্তাকে আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে শুধু শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানোর দিকটি উঠে এসেছে।উদ্দীপকে কবিতাংশের কবি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য বিদ্রোহে বিশ্বাসী। তাঁর চেতনায় এক অসীম সাহসী বীরযোদ্ধা বিচরণ করছে। যে বীর উৎপীরিতের ক্রন্দন শুনতে চায় না, সে বিদ্রোহী অত্যাচারীর খড়গহস্ত ভেঙে দিয়ে মানুষের মুক্তির নেশায় অবিচল। সৈয়দ শামসুল হক (১৯৩৫) রচিত ‘নূরলদীনের কথা মনে পড়ে যায়’ কবিতায় সংগ্রামী কৃষকনেতা নূরলদীনের কথা বর্ণিত হয়েছে। যার নেতৃত্ব ১১৮৯ বঙ্গাব্দে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন গড়ে ওঠে। কবির মতে, তাঁর প্রতিবাদী চেতনা বাঙালির সমকালীন সকল আন্দোলন ও সংগ্রামী উৎস। তাছাড়া কবিতায় ১৯৭১ সালের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াল বাস্তবতা বাঙালির বাক-স্বাধীনতা হরণ, শকুনরূপী দালালের আলখাল্লায় ছেয়ে যাওয়া প্রভৃতি উঠে এসেছে।কিন্তু উদ্দীপকের ভাবনায় কেবল কবিমনের প্রবল বিদ্রোহী চেতনার প্রকাশ লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি একেবারে যথার্থ। |