সোনার তরী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কবি- পরিচিতি:
নাম : প্রকৃত নাম: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছদ্মনাম: ভানুসিংহ ঠাকুর।
জন্ম ও পরিচয় : ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ শে বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে। তাঁর বাবার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতার নাম সারদা দেবী এবং পিতামহের নাম প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। তিনি মা-বাবার চতুর্দশ সন্তান ও অষ্টম পুত্র। তাঁদের পরিবারটি ছিল পিয়ালি ব্রাহ্মণ বংশের।
সংসার জীবন : বিবাহ : ৯ই ডিসেম্বর, ১৮৮৩। স্ত্রীর নাম : ভবতারিণী দেবী (খুলনা)। অবশ্য পরে তাঁর নাম মৃণালিনী রাখা হয়। সন্তান : ৫জন। দুই পুত্র, তিন কন্যা।
শিক্ষাজীবন : রবীন্দ্রনাথ বাল্যকালে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমী, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করলেও পাঠ শেষ করতে পারেন নি। ১৭ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ড গেলেও কোর্স সম্পন্ন করা সম্ভব হয় নি। তবে গৃহশিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞানার্জনের কোনো ত্রুটি হয়নি।
কর্মজীবন : ১৮৮৪ খ্রি. থেকে রবীন্দ্রনাথ তাঁর পিতার আদেশে বিষয়কর্ম পরিদর্শনে নিযুক্ত হন এবং ১৮৯০ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারি দেখাশোনা করেন। এ সূত্রে তিনি কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ও সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরে দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন।
সাহিত্যকর্ম : কাব্য : মানসী, সোনার তরী. চিত্রা, চৈতালি, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য, গীতাঞ্জলি, বলাকা, পূরবী, পুনশ্চ, বিচিত্রা, সেঁজুতি, জন্মদিনে, শেষলেখা উল্লেখযোগ্য।
উপন্যাস : গোরা, ঘরে-বাইরে, চতুরঙ্গ, চোখের বালি, নৌকাডুবি, যোগাযোগ, রাজর্ষি, শেষের কবিতা প্রভৃতি।
কাব্যনাট্য : কাহিনী, চিত্রাঙ্গদা, বসন্ত, বিদায় অভিশাপ, বিসর্জন, রাজা ও রাণী প্রভৃতি।
নাটক : অচলায়তন, চিরকুমার সভা, ডাকঘর, মুকুট, মুক্তির উপায়, রক্তকরবী, রাজা প্রভৃতি।
প্রবন্ধগ্রন্থ : পঞ্চভূত, বিচিত্র প্রবন্ধ, সাহিত্য, মানুষের ধর্ম, কালান্তর, সভ্যতার সংকট প্রভৃতি।
গল্পগ্রন্থ : গল্পগুচ্ছ, গল্পস্বল্প, তিনসঙ্গী, লিপিকা, সে, কৈশোরক প্রভৃতি উল্লেখ্য। রবীন্দ্রনাথই বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ছোটগল্পকার।
ভ্রমণ কাহিনি : জাপানযাত্রী, পথের সঞ্চয়, পারস্য, রাশিয়ার চিঠি, য়ুরোপ যাত্রীর ডায়ারি, য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র প্রভৃতি।
পুরস্কার ও সম্মাননা : নোবেল পুরস্কার(১৯১৩), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডি.লিট (১৯১৩), অক্সফোর্ড- বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডি.লিট (১৯৪০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডি.লিট (১৯৩৬)।
জীবনাবসান : তিনি ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শে শ্রাবণ) কলকাতায় পরলোক গমন করেন।
গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা। 🔒ব্যাখ্যা
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হলো সারা, 🔒ব্যাখ্যা
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা -🔒ব্যাখ্যা
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।। 🔒ব্যাখ্যা
একখানি ছোট ক্ষেত আমি একেলা -🔒ব্যাখ্যা
চারিদিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।। 🔒ব্যাখ্যা
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসী-মাখা 🔒ব্যাখ্যা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা-🔒ব্যাখ্যা
এপারেতে ছোট ক্ষেত আমি একেলা।। 🔒ব্যাখ্যা
গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে! 🔒ব্যাখ্যা
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা পালে চলে যায়,
কোন দিকে নাহি চায়, 🔒ব্যাখ্যা
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু ধারে- 🔒ব্যাখ্যা
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।। 🔒ব্যাখ্যা
ওগো তুমি কোথা যাও কোন বিদেশে? 🔒ব্যাখ্যা
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে। 🔒ব্যাখ্যা
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুসি তারে দাও-
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে 🔒ব্যাখ্যা
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।।
যত চাও তত লও তরণী-পরে।
আর আছে—আর নাই, দিয়েছি ভরে।।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে🔒ব্যাখ্যা
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে-
এখন আমারে লহো করুণা করে।। 🔒ব্যাখ্যা
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই! ছােট সে তরী
আমারি সােনার ধানে গিয়েছে ভরি। 🔒ব্যাখ্যা
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে, 🔒ব্যাখ্যা
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি- 🔒ব্যাখ্যা
যাহা ছিল নিয়ে গেল সােনার তরী। 🔒ব্যাখ্যা