আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
-আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা, 🔒ব্যাখ্যা কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা। 🔒ব্যাখ্যা যে কবিতা শুনতে জানে না
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে দিগন্তের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। 🔒ব্যাখ্যা যে কবিতা শুনতে জানে না
আমি উচ্চারিত সত্যের মতো
উনোনের আগুনে আলোকিত
আমি আমার মায়ের কথা বলছি,
তিনি বলতেন প্রবহমান নদী
যে সাঁতার জানে না তাকেও ভাসিয়ে রাখে। 🔒ব্যাখ্যা যে কবিতা শুনতে জানে না
সে নদীতে ভাসতে পারে না।
যে কবিতা শুনতে জানে না
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না 🔒ব্যাখ্যা আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলছি।
যুদ্ধ আসে ভালোবেসে
আমি আমার ভাইয়ের কথা বলছি।
যে কবিতা শুনতে জানে না
যে কবিতা শুনতে জানে না
যে কবিতা শুনতে জানে না
সে সূর্যকে হৃদপিন্ডে ধরে রাখতে পারে না। 🔒ব্যাখ্যা আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি
তাঁর পিঠে রক্তজবার মত ক্ষত ছিল
যে কর্ষণ করে
যে মৎস্য লালন করে
যে গাভীর পরিচর্যা করে
যে লৌহখন্ডকে প্রজ্জ্বলিত করে
দীর্ঘদেহ পুত্রগণ
আমি তোমাদের বলছি।
আমি আমার মায়ের কথা বলছি
বোনের মৃত্যুর কথা বলছি
ভাইয়ের যুদ্ধের কথা বলছি
আমি আমার ভালবাসার কথা বলছি।
আমি কবি এবং কবিতার কথা বলছি।
সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা 🔒ব্যাখ্যা সুপুরুষ ভালবাসার সুকণ্ঠ সংগীত কবিতা
জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি মুক্ত শব্দ কবিতা
রক্তজবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণ কবিতা।
আমরা কি তাঁর মত কবিতার কথা বলতে পারবো
আমরা কি তাঁর মত স্বাধীনতার কথা বলতে পারবো । 🔒ব্যাখ্যা [সংক্ষেপিত]
কবি-পরিচিতি
bvg
|
Avey Rvdi Ievq`yjøvn|
|
Rb¥ I cwiPq
|
wZwb 1934
wLªóv‡ãi 8B ‡deªæqvwi ewikvj Rjvi eveyMÄ Dc‡Rjvi AšÍM©Z e‡niPi-ÿz`ªKvwV
MÖv‡g Rb¥MÖnY K‡ib| Zuvi wcZvi bvg Avãyj ReŸvi Lvb|
|
wkÿvRxeb
|
wZwb 1948
wLªóv‡ã gqgbwmsn †Rjv ¯‹zj †_‡K gva¨wgK, 1950 wLªóv‡ã XvKv K‡jR †_‡K D”P
gva¨wgK Ges XvKv wek¦we`¨vjq †_‡K Bs‡iwR‡Z weG (m¤§vb) Ges GgG cvm K‡ib|
|
Kg©Rxeb
|
Kg©Rxe‡bi
ïiæ‡Z wZwb XvKv wek¦we`¨vj‡q Bs‡iwR wefv‡M †jKPvivi wn‡m‡e †hvM †`b| Zvici
evsjv‡`k miKv‡ii mwPe, 1982 mv‡j evsjv‡`k miKv‡ii K…wl I cvwb-m¤ú` gš¿x, 1984-‡Z
Av‡gwiKvq evsjv‡`‡ki ivóª`~Z, FAO -Gi cwiPvjK Ges GLv‡b †_‡K Aemi MÖnY K‡ib|
|
mvwnZ¨Kg©
|
Avwg
wKse`wšÍi K_v ejwQ, KL‡bv is KL‡bv myi, mwnòz cÖZxÿv, Kg‡ji †PvL, e„wó I
mvnmx cyiæ‡li Rb¨ cÖv_©bv, LuvPvi wfZi AwPb cvwL, Avgvi mgq, Avgvi mKj K_v, Rural Development problems and prospects,
Creative Development, Food and Faith, Yellow sands’ Hills ; China Through
Chinese Eyes cÖf…wZ Zvi D‡jøL‡hvM¨
mvwnZ¨Kg©|
|
cyi¯‹vi
|
ivóªfvlv
Av‡›`vjb Ges GB welqK mvwn‡Z¨ we‡kl Ae`vb ivLvi Rb¨ wZwb GKz‡k c`‡K f~wlZ nb|
evsjv mvwn‡Z¨ Ae`v‡bi Rb¨ Zuv‡K 1979 wLªóv‡ã evsjv GKv‡Wwg cyi¯‹vi cÖ`vb Kiv
nq|
|
g„Zz¨
|
2001
wLªóv‡ãi 19 gvP© wZwb g„Zz¨eiY K‡ib|
|
পাঠ-পরিচিতি
কবিতাটি আবু জাফর ওবায়দুলল্লাহর বিখ্যাত কাব্যগন্থ ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কাব্যগ্রন্থের নাম কবিতা। রচনাটি বিষয় ও আঙ্গিকগত অভিনবত্ব রয়েছে। আলোচ্য কবিতাটিতে উচ্চারিত হয়েছে ঐতিহ্যসচেতন শিকড়সন্ধানী মানুষের সর্বাঙ্গীণ মুক্তির দৃপ্ত ঘোষণা। প্রকৃতপক্ষে, রচনার প্রেক্ষাপটে আছে বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস, এই জাতির সংগ্রাম বিজয় ও মানবিক উদ্ভাসনের অনিন্দ্য অনুষঙ্গসমূহ। তিনি এই কবিতায় পৌনঃপুনিকভাবে মানবমুক্তির আকাঙ্ক্ষায় সোচ্চার হন। কবির একান্ত প্রত্যাশিত মুক্তির প্রতীক হয়ে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তাঁর বক্তব্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেন। কবির বর্ণিত এই ইতিহাস মাটির কাছাকাছি মানুষের ইতিহাস; বাংলার ভূমিজীবী অনার্য ক্রীতদাসের লড়াই করে টিকে থাকার ইতিহাস। ‘কবিতা‘ ও সত্যের অভেদকল্পনার মধ্য দিয়ে কবি নিয়ে আসেন মায়ের কথা, বোনের কথা, ভাইয়ের কথা, পরিবারের কথা। কবি এ-ও জানেন মুক্তির পূর্বশর্ত যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে পরিবার থেকে দূরে সরে যেতে হয়। ভালোবাসার জন্য, তাদের মুক্ত করবার জন্যই তাদের ছেড়ে যেতে হয়। এই অমোঘ সত্য কবি জেনেছেন আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস থেকে। কবিতাটির রসোপলব্ধির অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো এর আঙ্গিক বিবেচনা। এক্ষেত্রে, প্রথমেই যে বিষয়টি পাঠককে নাড়া দেয় তা হলো একই ধাঁচের বাক্যের বারংবার ব্যবহার। কবি একদিকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ পঙক্তিটি বারংবার প্রয়োগ করেছেন, অপরদিকে ‘যে কবিতা শুনতে জানে না/সে...’ কাঠামোর পঙক্তিমালার ধারাবাহিক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে কবিতা আর মুক্তির আবেগকে তিনি একত্রে শিল্পরূপ প্রদান করেছেন। এখানে কিংবদন্তি শব্দবন্ধটি হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যের প্রতীক। কবি এই নান্দনিক কৌশলের সঙ্গে সমন্বিত করেছেন গভীরতাসঞ্চারী চিত্রকল্প। একটি কবিতার শিল্পসার্থক হয়ে ওঠার পূর্বশর্ত হলো হৃদয়স্পর্শী চিত্রকল্পের যথোপযুক্ত ব্যবহার। চিত্রকল্প হলো এমন শব্দছবি যা কবি গড়ে তোলেন এক ইন্দ্রিয়ের কাজ অন্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে করিয়ে কিংবা একাধিক ইন্দ্রিয়ের সম্মিলিত আশ্রয়ে, আর তা পাঠক-হৃদয়ে সংবেদনা জাগায় ইন্দ্রিয়াতীত বোধের প্রকাশসূত্রে। চিত্রকল্প নির্মাণের আরেকটি শর্ত হলো অভিনবত্ব। এ সকল মৌল শর্ত পূরণ করেই আলোচ্য ইন্দ্রিয় থেকে ইন্দ্রিয়াতীতের দ্যোতনাই সঞ্চারিত হয়। নিবিড় পরিশ্রমে কৃষকের ফলানো শস্য একান্তই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য একটি অনুষঙ্গ। কিন্তু এর সঙ্গে যখন কবিতাকে অভেদ কল্পনা করা হয় তখন কেবল ইন্দ্রিয় দিয়ে একে অনুধাবন করা সম্ভব হয় না। সার্বিক বিবেচনায় কবিতাটি বিষয় ও আঙ্গিকের সৌকর্যে বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য সংযোজন। কবিতাটি গদ্যছন্দে রচিত। প্রচলিত ছন্দের বাইরে গিয়ে এটি প্রাকৃতিক তথা স্বাভাবিক ছন্দ।