অন্ধবধু

অন্ধবধূ

যতীন্দ্রমোহন বাগচী



লেখক পরিচিতি:

নাম : যতীন্দ্রমোহন বাগচী

জন্ম ও পরিচয় : ১৮৭৮ সালের ২৭শে নভেম্বর নদীয়া জেলার জামশেদপুর গ্রামে।

বংশ পরিচয় :  বাবার নাম হরিমোহন বাগচী ও মায়ের নাম গিরিশমোহিনী দেবী। 

শিক্ষাজীবন :  বাড়িতে জ্যাঠামশাইয়ের কাছে রামায়ণ ও মহাভারত পাঠের মধ্য দিয়ে যতীন্দ্রমোহনের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি ভর্তি হন বহরমপুর খাগড়া মিশনারি স্কুলে। তিনি খাগড়া মিশনারি স্কুল, বহরমপুর থেকে বৃত্তি নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৯৮ সালে কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করেন। তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০০ সালে এফএ এবং ১৯০২ সালে ডাফ কলেজ (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ)  থেকে বিএ পাস করেন।

কর্মজীবন :  যতীন্দ্রমোহন ব্যক্তিগত সচিবরূপে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে কলকাতা করপোরেশনে নাটোর মহারাজের ব্যক্তিগত সচিব ও জমিদারির সুপারিনটেনডেন্ট পদে এবং কর কোম্পানি ও এফএন গুপ্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। যতীন্দ্রমোহন বহু সাহিত্য পত্রিকায় গঠনমূলক অবদান রেখেছেন। ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত মানসী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯২১ ও ১৯২২ সালে তিনি যমুনা পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ পূর্বাচল পত্রিকার মালিক এবং সম্পাদক ছিলেন।

সাহিত্যকর্ম

কাব্যগ্রন্থ : লেখা, রেখা, অপরাজিতা, নাগকেশর, বন্ধুর দান, জাগরণী, নীহারিকা ও মহাভারতী।

জীবনাবসান  : ১লা ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


যতীন্দ্রমোহন বাগচীর কবি-মানসের প্রধান বৈশিষ্ট্য পল্লীপ্রীতি।

রবীন্দ্রানুসারী কবিকুলের অন্যতম কবি ছিলেন তিনি। 

‘পথের পাঁচালী’র বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় এবং জীবনানন্দ দাশের মতো তাঁর কাব্যবস্তু নিসর্গ-সৌন্দর্যে চিত্ররূপময়।



পায়ের তলায় নরম ঠেকল কী! 🔒ব্যাখ্যা

আস্তে একটু চল না ঠাকুরঝি

           ওমা, এ যে ঝরা-বকুল ! নয়?

তাইতো বলি, বসে দোরের পাশে,

রাত্তিরে কাল— মধুমদির বাসে

          আকাশ-পাতাল🔒ব্যাখ্যা কতই মনে হয়।

জ্যৈষ্ঠ আসতে ক-দিন দেরি ভাই -

আমের গায়ে বরণ দেখা যায়? 🔒ব্যাখ্যা

অনেক দেরি? কেমন করে হবে!

কোকিল-ডাকা শুনেছি সেই কবে, 🔒ব্যাখ্যা

           দখিন হাওয়া – বন্ধ কবে ভাই;

দীঘির ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগে -

শ্যাওলা-পিছল – এমনি শঙ্কা লাগে, 🔒ব্যাখ্যা

           পা-পিছলিয়ে তলিয়ে যদি যাই!

মন্দ নেহাত হয় না কিন্তু তায়-

অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যায় ! 🔒ব্যাখ্যা


দুঃখ নাইকো সত্যি কথা শোন,

অন্ধ গেলে কী আর হবে বোন?

           বাঁচবি তোরা – দাদা তো তোর আগে? 🔒ব্যাখ্যা

এই আষাঢ়েই আবার বিয়ে হবে, 🔒ব্যাখ্যা

বাড়ি আসার পথ খুঁজে না পাবে -

               দেখবি তখন - প্রবাস কেমন লাগে? 🔒ব্যাখ্যা

‘চোখ গেল’ ওই চেঁচিয়ে হলো সারা ।

আচ্ছা দিদি, কী করবে ভাই তারা-

 

       জন্ম লাগি গিয়েছে যার চোখ !

কাঁদার সুখ যে বারণ তাহার –🔒ব্যাখ্যা ছাই!

কাঁদতে পেলে বাঁচত সে যে ভাই,

        কতক তবু কমত যে তার শোক ।

‘চোখ গেল’— তার ভরসা তবু আছে—

         চক্ষুহীনার কী কথা কার কাছে! 🔒ব্যাখ্যা

টানিস কেন? কিসের তাড়াতাড়ি-

সেই তো ফিরে যাব আবার বাড়ি,

          একলা-থাকা- সেই তো গৃহকোণ—🔒ব্যাখ্যা

তার চেয়ে এই স্নিগ্ধ শীতল জলে

দুটো যেন প্রাণের কথা বলে—

           দরদ-ভরা দুখের আলাপন; 🔒ব্যাখ্যা

পরশ তাহার মায়ের স্নেহের মতো 🔒ব্যাখ্যা

ভুলায় খানিক মনের ব্যথা যত!



শব্দার্থ ও টীকা:

অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যায় ! : অন্ধবধূ অনুভবঋদ্ধ মানুষ অর্থাৎ তার অনুভূতি শক্তি প্রখর। আত্মমর্যাদা বোধেও সে সমৃদ্ধ। কিন্তু সে অন্ধ । এই অন্ধত্বের কষ্ট সে গভীরভাবে অনুভব করে। দীঘির ঘাটে যখন শেওলা পড়া পিছল সিঁড়ি জাগে, তখন সে পিছল খেয়ে জলে পড়ে ডুবে মরার আশঙ্কা প্রকাশ করে। সে এও অনুভব করে যে, ডুবে মরলে অন্ধত্বের অভিশাপ ঘুচত। কিন্তু কবিতাটির চেতনা থেকে মনে হয়, অন্ধবধূ নৈরাশ্যবাদী মানুষ নয়। জীবনের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধ আছে।


উত্তর : _

উত্তর :

i.  সহানুভূতির ভাব 

ii. বেদনাবোধ

iii.  ঘৃনাবোধ

নিচের কোনটি সঠিক?


উত্তর : দীঘির ঘাটের সিঁড়িটি শ্যাওলা-পিছল।

উত্তর : অন্ধবধূ তার ঠাকুরঝিকে একটু আস্তে চলতে বলেছে।

উত্তর :  ‘চোখ গেল’ পাখি চেঁচিয়ে সারা হলো।

উত্তর :  যতীন্দ্রমোহন বাগচী নদীয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

উত্তর :  ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় আমের কথা উল্লেখ আছে।

Score Board

_









_

_









_

_









_

_









_

_









_
Score Board