সেইদিন এই মাঠ
জীবনানন্দ দাশ
লেখক পরিচিতি
নাম : জীবনানন্দ দাশ।
জন্ম ও পরিচয় : তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সত্যানন্দ দাশ ও কবি কুসুমকুমারী দাশের পুত্র।
শিক্ষাজীবন : ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে বরিশাল ব্রজমোহন স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক, ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রজমোহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই.এ. ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে বি.এ. অনার্স এবং ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজিতে এম.এ. পাস করে।
সাহিত্যকর্ম : কাব্যগ্রন্থ : ‘ঝরা পালক’, ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’, ‘বনলতা সেন’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘সাতটি তারার তিমির;, ‘রূপসী বাংলা’, ‘বেলা অবেলা কালবেলা’।
প্রবন্ধগ্রন্থ : ‘কবিতার কথা’।
উপন্যাস : ‘মাল্যবান’, ‘সুতীর্থ’।
জীবনাবসান : তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২২শে অক্টোবর কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় পরলোকগমন করেন।
সেই দিন এই মাঠ স্তব্ধ হবে নাকো জানি - 🔒ব্যাখ্যা সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে!
🔒ব্যাখ্যাচালতাফুল কি আর ভিজিবে না শিশিরের জলে 🔒ব্যাখ্যা লক্ষ্মীপেঁচা গান গাবে নাকি তার লক্ষ্মীটির তরে? 🔒ব্যাখ্যা সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে! 🔒ব্যাখ্যা চারিদিকে শান্ত বাতি – ভিজে গন্ধ – মৃদু কলরব; 🔒ব্যাখ্যা খেয়ানৌকোগুলো এসে লেগেছে চরের খুব কাছে; 🔒ব্যাখ্যা পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল; 🔒ব্যাখ্যা
শব্দার্থ ও টীকা:
সেইদিন এই মাঠ... কবে আর ঝরে - জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির কবি। প্রকৃতির
রহস্যময় সৌন্দর্য তাঁর কবিতার মৌলিক প্রেরণা। তিনি জানেন বিচিত্র বিবর্তনের মধ্যেও প্রকৃতি তাঁর রূপ-রস-গন্ধ কখনই হারিয়ে ফেলবে না। তিনি যখন থাকবেন না তখনও প্রকৃতি তার অফুরন্ত ঐশ্বর্য নিয়ে মানুষের স্বপ্ন-সাধ ও কল্পনাকে তৃপ্ত করে যাবে। আলোচ্য অংশে কবি প্রকৃতির এই মাহাত্ম্যকে গভীর তৃপ্তি ও মমত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন।
আমি চলে যাব বলে... লক্ষ্মীটির তরে - পৃথিবীতে কেউই চিরস্থায়ী নয়। প্রত্যেক মানুষকেই এক সময় চলে যেতে হয়। কিন্তু শিশিরের জলে চালতা ফুল ভিজে যে রহস্যময় সৌন্দর্য সৃষ্টি হয় যুগ-যুগান্তে তার কোনো শেষ নেই। আর সেই শিশিরের জলে ভেজা চালতা ফুলের গন্ধের ঢেউ প্রবাহিত হতে থাকবে অনন্তকালব্যাপী। কবির এই বোধের মধ্যে প্রকৃতির এক শাশ্বতরূপ মূর্ত হয়ে উঠেছে, যেখানে লক্ষ্মীপেঁচাটির মমত্বের অনুভাবনাও ধরা দিয়েছে অসাধারণ এক তাৎপর্যে।
এশিরিয়া ধুলো আজ... - মানুষের গড়া পৃথিবীর অনেক সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে। এশিরিয় ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা এখন ধ্বংসস্তূপ ছাড়া কিছু নয়।
কিন্তু প্রকৃতি তার আপন রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে চিরকাল প্রাণময় থাকে। প্রকৃতির মধ্যে বিচিত্র গন্ধের আস্বাদ মৃদুমন্দ কোলাহলের আনন্দ, তার অন্তর্গত অফুরন্ত সৌন্দর্য কখনই শেষ হয় না। কবিতাটিতে জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির এই চিরকালীন সৌন্দর্যকে বিস্ময়কর নিপুণতায় উপস্থাপন করেছেন।